ওয়েব ডেস্ক: মা আসছেন মর্তে। আকাশ বাতাসে এখন শুধুই পুজো পুজো গন্ধ। কিন্তু এমন কোথাও দেখেছেন মায়ের পুজোতেই মায়েরাই ব্রাত্য। এমন দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায় পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের নাড়াজোল রাজবাড়ির দুর্গাপুজোয়। ৬০০ বছরের বেশি সময় ধরে এখানে পূজিত হচ্ছেন মা। কিন্তু প্রথা মেনেই আজও পূজো থেকে ব্রাত্য মহিলারা। তাদের না থাকে অঞ্জলি দেওয়ার সুযোগ, না থাকে ভোগ রান্না করার অধিকার। পুজোর যোগারযন্ত্র করে দিলেও পুজোয় অংশ নিতে পারেন না তাঁরা।
এই বছর রাজবাড়ির পুজো ৬১২ তম বছরে পদার্পণ করবে। রাজবাড়ির সঙ্গে বহু স্বাধীনতা সংগ্রামের যোগাযোগ ছিল। এই বাড়িতে যেমন এসেছেন নেতাজি, তেমন এসেছেন মহাত্মা গান্ধী ও ইন্দিরা গান্ধী,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,বিদ্যাসাগর,কাজি নজরুল ইসলাম থেকে মহাত্মা গান্ধী, মতিলাল নেহেরু,জওহরলাল নেহেরু।
৬০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুরের নাড়াজোল রাজবাড়ির দুর্গাপুজোয় প্রথা মেনে পুজো হচ্ছে। আজও অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেছেন রাজ পরিবারের মহিলারা। রাজ পরিবার সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান রাজার নায়েব ছিলেন উদয়নারায়ন ঘোষ।তিনি মেদিনীপুর জেলায় শিকার করতে এসেছিলেন।দাসপুরের নাড়াজোল জঙ্গলে শিকার করে ফেরার পথে হঠাৎই দেখেন একটি সারস পাখি বককে তাড়া করছে।এই দৃশ্য দেখে চমকে গিয়েছিলেন নায়েব মশাই।সেই সারস পাখি শিকার করতে গিয়ে সন্ধ্যা নেমে এলে এখানেই রাত্রিযাপন করেন।সেই রাতেই তিনি স্বপ্নাদেশ পান মা দুর্গার পুজো করার জন্য।ওই জঙ্গলেই একটি বাড়িতে রয়েছে মা দুর্গার অষ্টধাতুর মূর্তি।
মায়ের নির্দেশে সেই মূর্তি জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।নাড়াজোল এলাকার জঙ্গল সাফাই করে তৈরি করেন বাড়ি। সেই বাড়িতেই অষ্টধাতুর দুর্গা মূর্তি পূজা শুরু হয়। দুর্গাপুজোর যাবতীয় বিধি নিষেধ তিনি চালু করেন। তারপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খান পদবী পান তিনি।
রাজবাড়িতে বৈষ্ণব মতে পূজিত হন মা দুর্গা। দাসপুর ছাড়াও দুরদুরান্তের বহু মানুষ পুজোয় ভিড় জমান নাড়াজোল রাজবাড়ির দুর্গা পুজোয়।দাসপুরের নাড়াজোল রাজবাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একটি ঐতিহাসিক স্থান।