ওয়েব ডেস্ক: আজ কৌশিকী আমাবস্যা। এই উপলক্ষ্যে ভক্ত সমাগম তারাপীঠে। শুক্রবার এই অমাবস্যা লেগে ছাড়বে শনিবার। কৌশিকী অমাবস্যায় লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হয় তারাপীঠে। এই দিন যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্য করা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কৌশিকী অমাবস্যা তিথিকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে সাধু-সন্ন্যাসী ও ভক্তদের আগমন শুরু হয়েছে। ভক্ত সমাগমের ভিড়ে সুশৃঙ্খলভাবে দেবী দর্শন ও পূজা নিশ্চিত করতে মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে গোটা মন্দির চত্বরে বাঁশের ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ৫০০ আধিকারিক-সহ দেড় হাজার পুলিশকর্মী ও ২০০০ সিভিক ভলান্টিয়ার রাখা হচ্ছে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। সিসিটিভিও লাগানো হয়েছে। মায়ের আরতি ও পুজো দেখানোর জন্য বসানো হয়েছে জায়ান্ট স্ক্রিন।
মন্দির প্রাঙ্গণকে ফুল ও আলোকসজ্জায় সাজানো হচ্ছে। কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে পুরাণ কাহিনী অনুযায়ী দেবী তারা মা কৌশিকী রূপে আবির্ভূত হয়ে মহিষাসুর, কুশুম্ভ ও নিশুম্ভ দানবকে বধ করেছিলেন।কথিত আছে, দেবী তারার অপর নাম কৌশিকী। শুম্ভ নিশুম্ভকে বধ করতে দেবী নিজ দেহকোষ থেকে বের হয়ে আর এক দেবীমূর্তিতে আবির্ভূত হয়েছিলেন। অন্যদিকে এইদিনই তারাপীঠ মহাশ্মশানে শ্বেতশিমূল বৃক্ষের তলায় সাধক বামাক্ষ্যাপা সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। সেই কারণেই এই তিথিতে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। পূণ্যলাভের আশায় প্রতিবছরই লক্ষ লক্ষ ভক্ত ভিড় জমায় তারাপীঠে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবারও পুণ্যার্থীর সমাগম প্রায় পাঁচ লক্ষেরও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই মন্দির চত্বরে কড়া নিরাপত্তা জারি হয়েছে।
ভক্তদের ভিড় সামলাতে পুলিশ, মন্দির কমিটি ও প্রশাসন মিলিতভাবে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে বারবার মাইকিং করে ঘোষণা করা হচ্ছে যাতে ভক্তরা তাদের সন্তানদের সঙ্গে আসলে বাচ্চাদের পকেটে নাম ও ঠিকানা লিখে রাখেন। জানা গিয়েছে, ভক্তদের যাতে কোনো সমস্যায় না পড়তে হয়, সেজন্য বৃষ্টি হলেও লাইনে দাঁড়িয়ে পূজা দিতে পারেন—সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিরপল দিয়ে মাথার ওপর ছাউনি দেওয়া হচ্ছে। এদিন ভোর চারটায় দেবীকে স্নান ও মঙ্গল আরতির পর গর্ভগৃহ খোলা হয়। এরপরই দেবী অঙ্গে কৌশিকী পূজা শুরু হবে। সন্ধ্যায় দেবীকে স্বর্ণালঙ্কারে রাজবেশে সাজানো হয়।