ওয়েব ডেস্ক: ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন প্রাক্তন জেডিএস সাংসদ প্রজ্জ্বল রেভান্না। পরিচারিকাকে ধারাবাহিক ভাবে ধর্ষণ এবং সেই কাণ্ডের ভিডিও ছবি করে রাখায় অভিযুক্ত জনতা দল সেকুলারের নেতা প্রজ্জ্বল রেভান্নাকে বেঙ্গালুরুর অতিরিক্ত নগর দেওয়ানী ও দায়রা বিচারক সন্তোষ গজানন ঘাট দোষী সাব্যস্ত করলেন। আগামীকাল সাজা ঘোষিত হবে। মামলা শুরুর মাত্র ১৪ মাসের মধ্যেই রায় দিল জনপ্রতিনিধিদের বিশেষ আদালত। রায় শুনে আদালত চত্বরে কাঁদতে শুরু করেন রেভান্না।
গত ৩১ মে ইডির হাতে গ্রেপ্তার হন দেবেগৌড়ার নাতি। একাধিক অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছিল নেটদুনিয়ায়। অভিযোগ ওঠে, তাঁর বাড়ির পরিচারিকাদের টানা তিন বছর ধরে যৌন হেনস্তা করেছেন প্রজ্জ্বল। মহিলাকে ধর্ষণ, মহিলাকে বারংবার ধর্ষণ,মহিলার সম্ভ্রমহানি; মহিলাকে বিবস্ত্র করার জন্য ফৌজদারী বল প্রয়োগের অভিযোগ ওঠে রেভান্নার বিরুদ্ধে। বিকৃত যৌন লালসার মাধ্যমে আনন্দ লাভ, হুমকি দেওয়া, ঘটনাস্থল থেকে প্রমাণ লোপাটের প্রচেষ্টারও অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৬ ই ধারায় অভিযোগ। অর্থাৎ অন্যের ব্যক্তিগত ছবি অনুমতি ছাড়া প্রচার করার অভিযোগ।
অভিযোগ অনুযায়ী কোভিড লকডাউনের সময় ২০২১ সালে রেভান্না পরিবারের খামারবাড়িতে প্রথম ওই মহিলার সঙ্গে রেভান্নার অসদাচরণ। মহিলার মুখ করতে তাকে হুমকি দেওয়া হয়। ঘটনার কথা ফাঁস করলে তুলে রাখা ভিডিও ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন রেভান্না। কিন্তু সেই ছবি ফাঁস করার সংবাদ জানার পরেই কাজ ছেড়ে দেওয়া মহিলার অভিযোগ দায়ের। এই সূত্রে শুরু হওয়া তদন্তে ২৯০০ টি ভিডিও সামনে আসে। যার প্রতিটিতে যৌন হেনস্তা চালানো হয়েছে বিভিন্ন মহিলার সঙ্গে।
ওই মহিলা ছাড়াও রেভান্নার বিরুদ্ধে আরও তিনটি একই রকম অভিযোগ দায়ের। এই প্রেক্ষাপটে ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে দেশ ছেড়ে জার্মানিতে রেভান্না। ২০২৪ এর ৩১ মে দেশে ফিরতেই গ্রেফতার। ২০২৪ এর আগস্টে চার্জশিট দাখিল বিশেষ তদন্তকারী দলের। কেন অভিযোগ দেরিতে করা হয়েছে ছাড়াও যাবতীয় অভিযোগ মিথ্যা ও সাজানো বলে দাবি রেভান্নার। বিশেষ আদালতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল রেভান্নার বিরুদ্ধে যতগুলি অভিযোগ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম ধর্ষণ তথা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারা। এমন মামলায় জামিন দেওয়া যাবে না। খারিজ করে দেওয়া হয় আবেদন। মামলার শুনানি শুরু হয়েছে ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪-এ। মোট ২৩ জন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করা হয়। শুনানি শুরুর মাত্র সাতমাসেই সম্পন্ন হল বিচার। দোষী সাব্যস্ত হলেন রেভান্না।