ওয়েব ডেস্ক: ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত উত্তর ভারত। টানা কয়েক সপ্তাহের প্রবল বৃষ্টিতে একের পর এক পাহাড় ধসে, নদী উপচে জনজীবন কার্যত বিপর্যস্ত। সরকারি হিসাবে, জুন মাস থেকে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫০০-রও বেশি মানুষ। বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ। অবশেষে বন্যা পরিস্থিতি দেখতে যাবেন নরেন্দ্র মোদি। বন্যাবিধ্বস্ত সব রাজ্যেই যাবেন প্রধানমন্ত্রী। বিপর্যস্ত হিমাচল, জম্মু-কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড ও পাঞ্জাবের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে খুব ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলিতে সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকার এখনও কোনও রাজ্যেরই দাবি অনুযায়ী বিশেষ আর্থিক সাহায্য দেয়নি।বন্যাদুর্গত রাজ্যগুলি এখন প্রধানমন্ত্রীর সফরের দিকে তাকিয়ে।
প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড় ধসে নতুন করে বিপর্যস্ত হয়েছে জম্মু-কাশ্মীর ও উত্তরাখণ্ডও। একাধিক জেলায় ঘরবাড়ি ভেসে গিয়েছে, ভেঙে পড়েছে সেতু, ডুবে গিয়েছে চাষের জমি। ফলে বিপুল সংখ্যক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন ত্রাণশিবিরে। বন্যায় বিপর্যস্ত পাঞ্জাব। হিমাচলে ১,২০০-রও বেশি রাস্তা এখনও অবরুদ্ধ। মাণ্ডি, শিমলা, কুল্লু, চাম্বার মতো জেলার সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন। বন্ধ হয়ে গিয়েছে একাধিক জাতীয় সড়ক। বন্যা পরিস্থিতিতে পঞ্জাবের প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মানুষ কঠিন সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। ইতিমধ্যেই পঞ্জাবকে বন্যা বিপর্যস্ত রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। পাঞ্জাবে বন্যা পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৭ জনের। ২৩টি জেলায় প্রায় ১.৭৫ লক্ষ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। বিপর্যয়ের মুখে পঞ্জাবের ১২০০টি গ্রাম। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মান।১৯৮৮ সালের পর পাঞ্জাবে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। আবহে সেনার তৎপরতায় বহু মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সাহায্যের দাবি তুলেছে একাধিক রাজ্য সরকার। উত্তরাখণ্ড ইতিমধ্যেই ৫,৭০২ কোটি টাকার বিশেষ সাহায্য চেয়ে পাঠিয়েছে। হিমাচল প্রদেশে শুধু এই বর্ষায় ৯৫টি আকস্মিক বন্যা, ৪৫টি ক্লাউডবার্স্ট এবং ১৩২টি বড় ভূমিধস নথিভুক্ত হয়েছে। প্রাণ গিয়েছে অন্তত ৩৫৫ জনের, নিখোঁজ অন্তত ৪৯। সরকারি হিসাবে, হিমাচলে ক্ষতির অঙ্ক ছাড়িয়েছে ৩,৭৮৭ কোটি টাকা। বন্যা বিধ্বস্ত জম্মু-কাশ্মীর থেকে পাঞ্জাব, সব রাজ্যেই যাবেন মোদি। বন্যার ফলে উদ্ভূত সঙ্কট মোকাবিলায় নড়েচড়ে বসল কেন্দ্র। সরকারি সূত্রে খবর, উত্তর ভারতের বন্যা কবলিত রাজ্যগুলিতে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর ত্রাণ ও সাহায্যের ঘোষণা করবে কেন্দ্র।