Languages

বিরাট শিল্প সংকটের মুখে দক্ষিণ গুজরাত! কাজ হারাবেন লাখ লাখ শ্রমিক!

ওয়েব ডেস্ক: বস্ত্রশিল্পের জন্য পরিচিত রাজ্য গুজরাতে দখন মন্দার বাজার। ধস নামছে দক্ষিণ গুজরাতের টেক্সটাইল শিল্পে। গভীর সংকটে শিল্পপতিরা। চাহিদা কমে যাওয়া, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাওয়া এবং অর্ডারের অভাবে সুরাত অঞ্চলের অন্তত ২০টি টেক্সটাইল প্রসেসিং ইউনিট বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতিদিন লাখো মিটার কাপড় উৎপাদনকারী এই ইউনিটগুলোর মাসিক টার্নওভার ছিল প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। এখন সেগুলো কার্যত অচল।

দক্ষিণ গুজরাতে মোট প্রায় ৪০০ টেক্সটাইল প্রসেসিং ইউনিট রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ২০টি বড় ইউনিট সাম্প্রতিক সময়ে কার্যক্রম বন্ধ করেছে। সাউথ গুজরাত টেক্সটাইল প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন–এর সভাপতি জিতেন্দ্র ভাইয়ারিয়া জানান, “যে ইউনিটগুলো বন্ধ হয়ে গেছে, তাদের মধ্যে কয়েকটি বিক্রি হয়েছে, কিছু অন্য কাজে রূপান্তরিত হয়েছে, আর অন্তত তিনটি ব্যাংকের মাধ্যমে সিল করা হয়েছে।”

চাহিদা কমে যাওয়ায় যে ইউনিটগুলো চলছে, সেগুলিও ব্যয় মেটাতে পারছে না। প্রতিযোগিতার বাজারে খুব সামান্য লাভ হচ্ছে। পান্ডেসারা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাসোসিয়েশন–এর সভাপতি কমল তূলসিয়ান বলেন, “সুরাট থেকে সারাদেশে যে কাপড় সরবরাহ হয়, তার চাহিদাই এখন অস্বাভাবিকভাবে কম। যারা ইউনিট চালাচ্ছেন, তারাও প্রতিদিন ক্ষতির মুখে পড়ছেন।”

আহমেদাবাদে প্রায় ১১০টি টেক্সটাইল প্রসেসিং ইউনিট রয়েছে। এখানকার কোনো ইউনিট এখনও বন্ধ না হলেও কার্যক্রম মারাত্মকভাবে সংকুচিত হয়ে পড়েছে। আহমেদাবাদ টেক্সটাইল প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন–এর সদস্য নরেশ শর্মা জানান, “বাজারে নতুন অর্ডার নেই। কিছু ইউনিট কেবলমাত্র পুরনো অর্ডার অনুযায়ী কাজ করছে। অনেক জায়গায় ক্ষমতা ব্যবহার কমে ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে।” তিনি আরও বলেন, “তুলার দামের ওঠানামায় গ্রে ফ্যাব্রিকের দামও কমে গেছে। ফলে কম দামে অর্ডার নিলে উৎপাদকরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এজন্য অনেক ইউনিট অর্ডারই নিতে চাইছে না।”

টেক্সটাইল শিল্প গুজরাতের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি। কিন্তু চাহিদার ঘাটতি, কাঁচামালের মূল্য অস্থিরতা এবং বৈশ্বিক বাজারের প্রতিযোগিতায় দক্ষিণ গুজরাতের শিল্পপ্রধান সুরাত আজ সংকটে। শিল্পমহল আশঙ্কা করছে, দ্রুত পরিস্থিতি সামলাতে না পারলে আরও ইউনিট বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে, যা লক্ষাধিক শ্রমিকের জীবিকা ও রাজ্যের অর্থনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে।