ভারতের রাজধানী দিল্লির লোকালয় থেকে পথকুকুর সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই নির্দেশ নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। তিন বিচারপতির বেঞ্চে এখন এই মামলা বিচারাধীন। তবে শুধু ভারতেই নয়, বিশ্বের নানা দেশেই পথকুকুর নিয়ন্ত্রণ একটি গুরুতর সমস্যা। আর সেই সমস্যা মোকাবিলায় দেশভেদে নেওয়া হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন পদক্ষেপ। কোথাও রয়েছে হত্যার মতো কঠোর ব্যবস্থা, আবার কোথাও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় মিলেছে সফলতা।
আমেরিকা, রাশিয়া, পাকিস্তান কিংবা তুরস্কে পথকুকুর নিয়ন্ত্রণের অন্যতম উপায় হচ্ছে তাদের হত্যা। আমেরিকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দত্তক না হলে অনেক পথকুকুরকে মেরে ফেলা হয়। ২০২৩ সালে সে দেশে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ কুকুরকে হত্যা করা হয়েছে। রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতেও একই চিত্র দেখা যায়, যদিও সাম্প্রতিক সময়ে নির্বীজকরণের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তানেও দীর্ঘদিন ধরে পথকুকুর হত্যার প্রথা চালু রয়েছে, বিশেষত জলাতঙ্কের ভয়াবহতার কারণে। তুরস্কে গুরুতর অসুস্থ কুকুরদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, ইউরোপের একাধিক দেশ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিকল্প পথ বেছে নিয়েছে। নেদারল্যান্ডস দফায় দফায় আইন ও সচেতনতা বাড়িয়ে বর্তমানে সম্পূর্ণ পথকুকুরমুক্ত দেশে পরিণত হয়েছে। স্পেনে নির্বীজকরণ, সামাজিকীকরণ এবং বাধ্যতামূলক মাইক্রোচিপ ব্যবস্থার মাধ্যমে পথকুকুর নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সেখানে কোনওভাবেই কুকুর হত্যার অনুমতি নেই। বুলগেরিয়াতেও একসময় গণহারে কুকুর হত্যা করা হলেও পরে নির্বীজকরণ এবং টিকাকরণের উদ্যোগ নেওয়ায় পথকুকুরের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
ভারতের পড়শি দেশ ভুটানও নজির গড়েছে। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া নির্বীজকরণ ও টিকাকরণ কর্মসূচির মাধ্যমে ২০২৩ সালের মধ্যে কার্যত সব পথকুকুরকে ওই প্রক্রিয়ার আওতায় আনা হয়েছে। পাকিস্তান যদিও একই পথে হাঁটার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তা এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।