ওয়েব ডেস্ক: মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সাধ্বী প্রজ্ঞা-সহ সাত অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস করে দিল মুম্বইয়ের বিশেষ এনআইএ আদালত। মহারাষ্ট্রের সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাপূর্ণ মালেগাঁওয়ে ২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর এই বিস্ফোরণ হয়েছিল। যাতে ৬ জন প্রাণ হারান এবং ৯৫ জন জখম হয়েছিলেন। ১৭ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এদিন রায় ঘোষণা হয়। এই বিস্ফোরণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিলেন বিজেপির প্রাক্তন ভোপালের সাংসদ সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুর সহ ৭ জন। বৃহস্পতিবার আদালত জানায়, কেবল সন্দেহের বশে মামলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যে তথ্যপ্রমাণ দাখিল করা হয়েছে, তা সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয় বলেও জানায় আদালত। বিচারক একে লাহোটি বলেন, “সমাজে এটা একটা ভয়াবহ ঘটনা। কিন্তু কেবল নৈতিকতার যুক্তিতে আদালত কাউকে দোষী সাব্যস্ত করতে পারে না। এই মামলায় এনআইএ-র বিশেষ আদালত সব অভিযুক্তকে বেকসুর মুক্তি দিল।
২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওয়ে রমজান মাসে এবং নবরাত্রি উৎসব শুরুর ঠিক মুখে এই বিস্ফোরণ ঘটেছিল। তদন্তে উঠে আসে যে ঘটনার নেপথ্যে ছিল একটি একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। ২০০৮ সালের অক্টোবরে অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হন সাধ্বী প্রজ্ঞা। বিস্ফোরণস্থলে যে মোটর সাইকেলটি উদ্ধার হয়েছিল, সেটি তাঁর নামে রেজিস্ট্রেশন করা ছিল। অভিযোগ উঠেছিল যে, বিস্ফোরণের পরিকল্পনা করেছিলেন প্রজ্ঞাই। প্রাক্তন সেনা আধিকারিক লেফটেন্যান্ট কর্নেল প্রসাদশ্রীকান্ত পুরোহিতও গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন। পরে দু’জনেই জামিন পান।বৃহস্পতিবার আদালত জানিয়েছে, ফরেন্সিক পরীক্ষায় বাইকটি যে প্রজ্ঞার, তা প্রমাণিত হয়নি। আদালতের এ-ও পর্যবেক্ষণ, প্রজ্ঞা বিস্ফোরণের ঘটনার দু’বছর আগেই সন্ন্যাসী হয়ে গিয়েছিলেন।
বিচারক রায়ে বলেন, পুলিশ ও তদন্তকারীরা অভিযুক্তদের অপরাধ সাব্যস্ত করার কোনও জোরাল প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। সে কারণে তাঁদের বেনিফিট অফ ডাউটের সুবিধা প্রদান করে নিরপরাধ ঘোষণা করা হচ্ছে। এই মামলায় যে সাতজন অভিযুক্ত ছিলেন, তাঁরা হলেন, ভোপালের প্রাক্তন বিজেপি এমপি সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুর, তৎকালীন সেনা গোয়েন্দা অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল প্রসাদ শ্রীকান্ত পুরোহিত, অবসরপ্রাপ্ত মেজর রমেশ উপাধ্যায়, অজয় রাহিরকর, সুধাকর দ্বিবেদী, সুধাকর চতুর্বেদী এবং সমীর কুলকার্নি।